ঢাকা ০৫:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি'তে বাধা নেই

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে- মিশ্র প্রতিক্রিয়া

Mazhar Islam
  • আপডেট সময় : ০৫:০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪ ১৪৯ বার পড়া হয়েছে
Spread the love

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সাড়ে চার বছর আগে বুয়েট কর্তৃপক্ষের জারি করা ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’র কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এ–সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। আদালতে বক্তব্য রাখেন- এডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন। সঙ্গে ছিলেন এডভোকেট মোহাম্মদ জগলুল কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর ওই ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ জারি করেছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ। এর বৈধতা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন সোমবার রিটটি করেন।

শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে ২০১৯ সালে বিজ্ঞপ্তি দেয়। কোন আইনে, কেন ও কিসের বলে এটি করা হলো, এর কোনো কারণ বলা হয়নি। এটি চলমান (রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা) রয়েছে, যে কারণে রিট আবেদনকারী সংক্ষুব্ধ। ১৯৬১ সালের বুয়েট অধ্যাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা সম্পর্কে বলা আছে। রাজনৈতিক সংগঠনের নামে ভিন্নতর কিছু করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক সংগঠন নিষিদ্ধ করার কোনো ক্ষমতা অধ্যাদেশে তাদের দেওয়া হয়নি। বিজ্ঞপ্তিটি সংবিধানের ৩৭, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, ওই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে ক্ষমতার চর্চা করেছে, এ ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগের উৎস আইনে তাদের নেই। যে কারণে বিজ্ঞপ্তিটি এখতিয়ারবহির্ভূত। রুল ও বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিতের প্রার্থনা জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে হলের ভেতরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রাতভর নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় করা মামলায় আদালত ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। আবরারকে পিটিয়ে হত্যার পর বুয়েট কর্তৃপক্ষ ওই ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ জারি করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়।

নিরাপত্তা জনিত ভয়ে ভীত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বুয়েট শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ উক্ত বিষয়ে তাঁদের মতামত ব্যাক্ত করেছেন। একজন বলেছেন, “বুয়েটে আবারো সন্ত্রাসীদের খুনের জন্য রাস্থা উন্মোক্ত দেওয়া হলো।”
একজন মন্তব্য করেছেন, “আওয়ামী লীগ ছাড়া সবাই ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে। অথচ বিচারক মাত্র একজন তিনি বলে দিলেন ‘ চলবে ‘। আমজনতার কোন মূল্যই নেই।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি'তে বাধা নেই

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলবে- মিশ্র প্রতিক্রিয়া

আপডেট সময় : ০৫:০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪
Spread the love

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সাড়ে চার বছর আগে বুয়েট কর্তৃপক্ষের জারি করা ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’র কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এ–সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। আদালতে বক্তব্য রাখেন- এডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন। সঙ্গে ছিলেন এডভোকেট মোহাম্মদ জগলুল কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর ওই ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ জারি করেছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ। এর বৈধতা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন সোমবার রিটটি করেন।

শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে ২০১৯ সালে বিজ্ঞপ্তি দেয়। কোন আইনে, কেন ও কিসের বলে এটি করা হলো, এর কোনো কারণ বলা হয়নি। এটি চলমান (রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা) রয়েছে, যে কারণে রিট আবেদনকারী সংক্ষুব্ধ। ১৯৬১ সালের বুয়েট অধ্যাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা সম্পর্কে বলা আছে। রাজনৈতিক সংগঠনের নামে ভিন্নতর কিছু করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক সংগঠন নিষিদ্ধ করার কোনো ক্ষমতা অধ্যাদেশে তাদের দেওয়া হয়নি। বিজ্ঞপ্তিটি সংবিধানের ৩৭, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, ওই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে ক্ষমতার চর্চা করেছে, এ ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগের উৎস আইনে তাদের নেই। যে কারণে বিজ্ঞপ্তিটি এখতিয়ারবহির্ভূত। রুল ও বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিতের প্রার্থনা জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে হলের ভেতরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রাতভর নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় করা মামলায় আদালত ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। আবরারকে পিটিয়ে হত্যার পর বুয়েট কর্তৃপক্ষ ওই ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ জারি করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়।

নিরাপত্তা জনিত ভয়ে ভীত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বুয়েট শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ উক্ত বিষয়ে তাঁদের মতামত ব্যাক্ত করেছেন। একজন বলেছেন, “বুয়েটে আবারো সন্ত্রাসীদের খুনের জন্য রাস্থা উন্মোক্ত দেওয়া হলো।”
একজন মন্তব্য করেছেন, “আওয়ামী লীগ ছাড়া সবাই ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে। অথচ বিচারক মাত্র একজন তিনি বলে দিলেন ‘ চলবে ‘। আমজনতার কোন মূল্যই নেই।”